আমরণ অনশন ও আত্মাহুতির হুমকি সংবাদ সম্মেলনে
ওসি বললেন ঘটনা চসিক মেয়রের নলেজে আছে

পুলিশ ও কাউন্সিললের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ এলাকাবাসীর

পুলিশ ও কাউন্সিললের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে এলাকাবাসীর সংবাদ সম্মেলন

চট্টগ্রাম : আকবরশাহ থানা পুলিশ, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসীম এর সহযোগিতায় রতনপুর রিয়েল এস্টেট কোম্পানী জোরপূর্বক জমি জবর দখল করছে বলে অভিযোগ তুলেছে আকবরশাহ এলাকাবাসী।

বুধবার (২৮ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোহাম্মদ মিলখান আলী।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আকবর শাহ থানাধীন ইস্পাহানী ১ নং গেট এলাকায় পাহাড়িকা সিএনজি পাম্পের পূর্বপাশে দীর্ঘদিন ধরে নিজ মৌরশী সম্পত্তিতে নূর উদ্দিন গংরা বসবাস করে আসছে। গত ২/৩ বছর আগে এসব সম্পত্তির উপর কু নজর পড়ে স্থানীয় কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসীমের। সে এসব সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য মালিকদের উপর চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু মালিকপক্ষ জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় কাউন্সিলর জসীম এলাকাবাসীকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরে গত ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসব জায়গা দখলের ষড়যন্ত্র হিসেবে রতনপুর রিয়েল এস্টেট কোম্পানী, কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসীম ও আকবর শাহ থানার ওসি মো.আলমগীর একটি জোট করেন। রতনপুর রিয়েল এস্টেট কোম্পানীকে জায়গাগুলো দখল করে দিবে_এমন শর্তে তাদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন হয়। এসব চক্রান্তের পর গত ১২ মার্চ রাতের অন্ধকারে পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা আমাদের মৌরশী সম্পদের উপর রতনপুর রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। এ সময় আমরা প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ ও সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদেরকে হত্যার হুমকি দেয় এবং আমাদেরকে বেধে রাখে। পরে ভোরে কাজ শেষ করে তারা ওই এলাকা ত্যাগ করে এবং সেখানে রতনপুর রিয়েল এস্টেট কিছু নিরাপত্তাকর্মী রেখে যায়। পরবর্তীতে ১৩, ১৪ মার্চ একই কায়দায় পর্যায়ক্রমে জায়গাগুলো দখল করতে থাকে। এ সময় কি মূলে জায়গাগুলো দখল করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি।

ঘটনার পর আমরা আকবর শাহ থানার ওসি মো. আলমগীরের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি আমাদের মিথ্যা মামলা দেয়ার হুমকি দেন এবং এ বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করতে বলেন। ওসি আরো বলেন, জায়গা দখলের ঘটনা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের নলেজে আছে। পরে এলাকাবাসী সিটি মেয়রের সাথে সাক্ষাত করে বিষয়টি অবহিত করলে মেয়র ঘটনা জানেন না বলে জানান এবং মেয়র বরবার একটি অভিযোগ দিতে বলেন। আমরা ১৫ মার্চ অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু প্রতিদিন রাতে পুলিশ বাহিনী এসব কাজ করে যাচ্ছে।

গত ২৫ মার্চ রাত থেকে তারা দখল কার্যক্রম চালিয়ে যায়। এ সময় আকবর শাহ থানার এসআই শফিউল আলম মুন্সী আমাদের মা বোনদের ওড়না, শাড়ী টেনে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে এবং তাদেরকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আমরা কোন প্রতিকার পায়নি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সিএমপি কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভূক্তোভূগিরা। এছাড়া সংবাদ সম্মেলন থেকে ৬ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ২৯ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ, ১ এপ্রিল মানববন্ধন, ২ এপ্রিল পুলিশ মহাপরিদর্শকের সাথে সাক্ষাত, ৩ এপ্রিল ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা, ৪ এপ্রিল থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন এবং প্রয়োজনে আত্মাহুতি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মিলখান আলী, নূর উদ্দিন, নূর বাহার, হাজী শহীদুল্লাহ, হুমায়ন কবির, রুস্তম আলী, আবু তাহের সওদাগরসহ অন্যান্যরা।

শেয়ার করুন