ট্রাফিক সপ্তাহ
যানবাহনের বিরুদ্ধে ৮০ মামলা, লাইসেন্সধারীদের ফুলেল শুভেচ্ছা

ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে সারা দেশের ন্যায় হাটহাজারীতেও বিশেষ অভিযান চালিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।

বুধবার (৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুরু করে একটানা বিকেল ৫টা পর্যন্ত ট্রাফিক আইন অমান্য করায় সড়কে যানচলাচলের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালায়। এ অভিযানে বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে ৮০টি মামলা হয় এবং ১৫ টি গাড়ী আটক করা হয়েছে।

এ অভিযানের নেতৃত্ব ছিলেন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লা আল মাসুম। সকাল থেকে এ অভিযানে গাড়ীর কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক পাওয়ায় প্রায় ৩০জন চালককে ফুল দিয়ে সম্মাননা করেন পুলিশ সুপার সহ উত্তর জেলা ও হাটহাজারী ট্রাফিক জোনের অফিসার শাহ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তবে নগদ অর্থ দন্ড কাউকে করা হয়নি।

হাইড্রোলিক হর্ণ ব্যবহার, হুটার ও বিকন লাইট ব্যবহার, মাইক্রোবাসে কালো গ্লাস ব্যবহারের কারনে ৮০টি মামলা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যস্ততম সদরের বাসষ্টেশন জিরো পয়েন্ট যানযট এলাকা ছিল একদম ফাঁকা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে কিছুটা গাড়ী বাড়তে থাকলে শুরু হয় এ অভিযান। এ সড়ক দিয়ে চট্টগ্রাম পার্বত্য এলাকাসহ ২২টি সড়কে যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে। প্রতিদিন যানযটের নগর হিসেবে পরিচিত তীব্র ভোগান্তির মোড় একদম ফাঁকা ছিল। ট্রাফিক বিভাগের সকল দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন রোদ্রের তাপদাহে দাড়িয়ে গাড়ীর কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ ফিটনেস পরিক্ষা করতে দেখা গেছে। সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও চালক, যাত্রী, পথচারীদের সচেতনতা করতে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশদের দাবি আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করি সড়কের যানযট নিরসন করতে। কিছু অনবিজ্ঞ চালক সড়কের নিয়ম-নীতি না জানার কারনে দেশে দুর্ঘটনার হার বাড়ছে। অকালে হারাচ্ছে অনেক তরতাজা প্রাণ। সকাল থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত বিশেষ অভিযানে বেশীর ভাগ মোটর সাইকেলের মামলা হয়েছে বলেও জানা যায়।

গাড়ীর ডকুমেন্ট , ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ যাবতীয় কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হতে দেখা গেছে অনেক গাড়ী চালককে। মাইক্রোবাস, হাইছ,নোহা, গাড়ী সহ প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল এবং সিএনজিসহ মোট ৮০টি চালক ও যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গাড়ী চালক জানান, বিআরটিসি কতৃপক্ষ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে বিগত কয়েক বছর আমরা গাড়ী চালালেও কোন লাইসেন্স পায়নি । বিআরটিসিতে গেলে দালালদের খপ্পরে পড়ে অনেকেই বিভ্রান্তি হতে হয়। আমরা চাই সরকারী নিয়ম নীতি অনুযায়ী সড়কে আমরা গাড়ী চালাতে। কোন চালক ইচ্ছাকৃতভাবে চাই না সড়কে কোন পথচারীর জীবন কেড়ে নিতে। দেখে শুনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটাতে চাই না। তবে ট্রাফিক পুলিশের এ অভিযানকে অনেক যাত্রী ও পথচারীরা ধন্যবাদ জানান।

হাটহাজারী ট্রাফিক সার্জেন রবিউল হোসেন জানান, যানজট নিরসন ও দুর্ঘটনা রোধ করতে এ অভিযান চলমান থাকবে। এ কাজে পুলিশকে সহযোগীতা করতে সবাইকে এগিয়ে আহবান জানান তিনি। তবে বড় যানবাহনগুলোর বিরুদ্ধে তেমন সাড়াশি অভিযান করতে দেখা যায়নি।

হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহ উপলক্ষে সারা দেশের ন্যায় হাটহাজারীতেও সকাল থেকে পুলিশের বিশেষ অভিযান চলছে। গাড়ীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ফিটনেস পরিক্ষা, অবৈধ গাড়ী পাকিং, যত্রতত্র যানযটমুক্ত করতে বাসষ্টেশন জিরো পয়েন্টে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। যে সব গাড়ীর কাগজপত্র, লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের গাড়ীগুলোকে মামলা দিয়েছি ও যে সব গাড়ীর সকল প্রয়োজনীয় সব দেখাতে পেরেছে তাদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে সম্মাননা দিয়েছি।

অভিযানের মাঝে মাঝে পথচারী,যাত্রী ও চালকদের সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়েছি। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

শেয়ার করুন