সীতাকুণ্ডে কুৎসা রটনাকারীকে খুঁজছে পুলিশ

পলাতক ইব্রাহিম খলিল

চট্টগ্রাম : সীতাকুণ্ডে কুৎসা রটনাকারী ইব্রাহিমকে খুঁজছে পুলিশ। সে সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাদীর ছেলে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রেসক্লাবের কার্য নির্বাহী সদস্য ও কল্যাণ ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান এম.হেদায়েত উল্লাহ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পর থেকে পলাতক রয়েছে ইব্রাহিম।

বৃহস্পতিবার (৭ মে) রাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই হারুন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন : করোনামুক্ত পাহাড় রাণী খাগড়াছড়ি!
আরো পড়ুন : চন্দনাইশে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার অস্ত্র ব্যবসায়ী

মামলাসূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাদীর ছেলে ইব্রাহিম খলিল (৫২) গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ার পর ঐ এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম নিজামী তাকে মুচলেকার পরিবর্তে ছাড়িয়ে আনেন। এরপর সে এলাকা থেকে পালিয়ে এসে অনুমোদন বিহীন নামসর্বস্ব একটি অনলাইনে লেখালেখি শুরু করেন। কথিত অনলাইনে যা ইচ্ছা লিখে তা ফেসবুকে প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছিল।

তার অত্যাচারের সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়ে। এসব বিষয়ে সাংবাদিকরা লিখতে গেলে সে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। সম্প্রতি সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম আল মামুন প্রেসক্লাব ভবন নির্মাণের স্থান পরিদর্শন করে সেখানে গার্ড ওয়াল নির্মাণ করে দেবার ঘোষণা দেন। বিভিন্ন পত্রিকায় এ সংবাদ প্রকাশিত হলে ইব্রাহিম খলিল প্রকাশ খইল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের ছবিসহ কথিত অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকদেরকে ভূমিদস্যু উল্লেখ করে লাগাতার অপপ্রচার শুরু করে।

এতে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতারা চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এছাড়া এমন অপপ্রচারে প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মামলার পরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই হারুন অভিযুক্তের দুই স্ত্রীকে নিয়ে থাকা দুই বাড়িতেই অভিযান চালান। অভিযানে টের পেয়ে সে পালিয়ে যায়। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তার দাবী তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার খবর শুনে ইব্রাহিম খলিলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা কোন প্রক্রিয়ায় আইনগত সহায়তা পাওয়া যায়_সেসব বিষয়ে প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দর সাথে যোগাযোগ শুরু করেছে।

জানতে চাইলে সৈয়দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম নিজামী বলেন, অনুমোদন বিহীন অনলাইনে লিখে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সে মানুষকে এমন অত্যাচার করছে যে মানুষ চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, সে গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলো। আমিই তাকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনি। তার সম্পর্কে আর কি-ই বলা যায়?

সীতাকুণ্ড উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, তার বিরুদ্ধে অন্যের বৌ ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে, ২০১৩-১৪ সালে নাশকতায় ইন্ধন দেওয়া, গরু চুরি, নানান লোভনীয় কাজ করে দেবার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্নসাতসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ফেসবুককে হাতিয়ার করে সে সম্মানিত মানুষের সম্মান নিয়ে টানাটানি করছে। আমার সম্মান হানির কারণে আমিও তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব শীঘ্রই।

সীতাকুণ্ডের এমপি আলহাজ্ব দিদারুল আলম বলেন, এই লোকটি একেক সময় একেকজনের উপর ভর করে সব অপকর্ম থেকে রেহায় পেয়ে পেয়ে আজ এত দুঃসাহসী হয়ে উঠেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংবাদিককে মানহানি করলে আর অন্য নেতাদের সম্মান রাখল কোথায় ? তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শেয়ার করুন