গভীর রাতে জমি দখল করতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেতা নিহত

নববধূর সাথে নিহত সোহেল রানা

কক্সবাজার : বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় স্থানীয় এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহত সোহেল রানা স্থানীয় পালাকাটা হাশেম মাস্টারপাড়া এলাকার মাস্টার আব্দুর রকিমের ছেলে। তিনি চকরিয়া পৌরসভার ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।

শনিবার (২৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী এলাকার হাজীপাড়ায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। মাত্র ২৪ দিন আগে সোহেল বিয়ে করেন বলে জানা গেছে।

আরো পড়ুন : সুপারী পাড়াকে কেন্দ্র করে হামলা, অন্তঃসত্ত্বাসহ আহত ২
আরো পড়ুন : ছনহরাবাসীর অফুরান ভালবাসা চান সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ওসমান

ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে আব্দুল মান্নান (৩৪) নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক মান্নান স্থানীয় হাজীপাড়া এলাকার কবির আহম্মদের ছেলে।

স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, চকরিয়া পৌর শহরের ভরামুহুরী এলাকার ৬ শতক জমির মালিকানা দাবি করে আসছিলেন চকরিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসি চৌধুরী এবং স্থানীয় ঠিকাদার নুরুল আলম। বিরোধপূর্ণ জমিটি নুরুল আলমের দখল রয়েছে।

বিরোধ নিরসনে দুই পক্ষের মাঝে বেশ কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। দাবির পক্ষে যৌক্তিক কোনো ধরনের কাগজপত্র উপস্থাপন করতে না পারলেও জায়গার মালিকানা দাবিতে অনড় আওয়ামী লীগ নেত্রী জেসি চৌধুরী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৩০ নভেম্বর) দুই পক্ষের মধ্যে আবারো বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, শনিবার রাতে একদল সশস্ত্র লোককে ওই জায়গা দখল করতে পাঠান আওয়ামী লীগ নেত্রী জেসি চৌধুরী। নুরুল আলমের লোকজন তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে জেসির পক্ষের লোকেরা গুলি চালায়। এতে আহত হন নুরুল আলমের পক্ষের বেশ কয়েকজন। তারা ভয়ে জমি ছেড়ে পালালেও রাতের আঁধারে এলোপাতাড়ি গুলির শব্দ শুনে ক্ষেপে যান স্থানীয়রা। এলাকাবাসী জড়ো হয়ে সশস্ত্র দখলদারদের ওপর চড়াও হয়।

দলবদ্ধ এলাকাবাসীকে দেখে জেসির লোকজন পালালেও সোহেল আটকা পড়েন। বিক্ষুব্ধ লোকজন সোহেলকে পেছন থেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। বেদম প্রহারে আহত হন সোহেল। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাকের মোহাম্মদ জুবায়ের বলেন, ‘ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলের দিকে জানাজার পর নিহতের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এখনো নিহতের পরিবার মামলা করেনি। তবে এরই মধ্যে পুলিশ জড়িতদের ধরতে মাঠে নেমেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর পেকুয়ার কৃষক লীগ নেতা মেহের আলীর মেয়ে কলির সঙ্গে সোহেলের বিয়ে হয়। বিয়ের ২৪ দিনের মাথায় স্বামী সোহেলকে হারালেন নববধূ কলি।