গাজীপুরে মামলার বাদীকে হত্যার হুমকি পুলিশ কর্মকর্তার

গাজীপুর : উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে পুলিশের এক এসআই মামলার বাদীকে অপহরণ ও গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাণভয়ে বাদীর মেয়ে তাহমিনা আক্তার রূপালী ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। এ ঘটনায় ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ হেড কোয়ার্টারে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোঃ আসাদুজ্জামান। তিনি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার পশু হাসপাতাল রোডের জামাল উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদি খান থানায় কর্মরত।

অভিযোগে জানা গেছে, পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামানের সঙ্গে ২০১৩ সালের ৪ জুলাই ১০ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে গাজীপুর মহানগরীর চতর এলাকার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ে তাহমিনা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর জাহাঙ্গীর তার মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে ১১ লাখ টাকা খরচ করে টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্র মেয়ে জামাতাকে প্রদান করেন। পরে বাড়ি করার জন্য জমি দাবি করলে তিনি ১৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা খরচ করে গাজীপুর মহানগরীর নীলেরপাড়া এলাকায় মেয়েকে জমি ক্রয় করে দেন। পরবর্তীতে এসআই আসাদুজ্জামান ফ্ল্যাট ক্রয় করার জন্য আরও ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না পাওয়ায় ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তারের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।

এ বিষয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি আপস মীমাংসার চেষ্টা করার সময় উক্ত দারোগা তাহমিনা আক্তারকে রেখে ২য় বিয়ের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে গোপনে তিনি শিলা নামের এক মেয়েকে বিয়ে করে। সে সংসারে একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে। বিষয়টি জানার পর তাহমিনা আক্তার প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়।

এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করতে গেলে আসামি পুলিশের দারোগা হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। পরে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত ২৫ মে এসআই আসাদুজামান ও তার মা আনোয়ারা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে গত ১৫ জুন আসামিরা হাইকোর্ট থেকে ৪ সাপ্তাহের জামিন লাভ করেন।

তাহমিনা আক্তারের পিতা জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, জামিন লাভের পর এসআই আসাদুজ্জামান মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি তাকে অপহরণ ও খুনের ভয় দেখায়। তার ভয়ে মেয়ে তাহমিনা বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। এ ঘটনায় তিনি জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি এসআই আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিএন্ডপিএস দ্বারা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে এসআই আসাদুজ্জামান জানান, তার নামে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি কাউকে নির্যাতন বা হত্যার হুমকি দেননি। তিনি তার কর্ম এলাকা সিরাজদি খানে আছেন। যে অভিযোগটি পুলিশ হেড কোয়ার্টারে দেয়া হয়েছে তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে।