
চট্টগ্রাম : আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর একটিবারও ব্যর্থ হয়নি। ঠিক সময়ে বই বিতরণ করেছি। এমনকি ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির মধ্যেও জানুয়ারির ১ তারিখেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছেছে। আমাদের হিসেবে, গত ৯ বছরে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২৬০ কোটি ৮৫ লাখেরও বেশি বিনামূ্ল্য বই বিতরণ করা হয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
শনিবার (৬ জানুয়ারী) রাউজানের কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজের ৫০ বছরপূর্তি রজত জয়ন্তী’র দ্বিতীয় দিন মূল পর্বের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর সরকার প্রত্যক শিক্ষার্থীর হাতে বছরের প্রথমদিন বই দিয়ে পৃথিবীতে একটি নজির স্থাপন করেছে। দুনিয়ার আর কোথাও এভাবে বই দেয়ার নিয়ম নেই। আমরাও এখন অন্য দেশের কাছে অনুকরণীয়, অনুসরণীয় হচ্ছি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু এমপি, মাধ্যমিক ও শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী দেওয়ান মোহাম্মদ হানজালা, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মু. মোহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান চৌধুরী, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, কদলপুর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম উদ্দিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও বিশ্বজিত ভট্টাচার্য্য।
মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, আমরা নতুন প্রজন্মকে বর্তমান যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা দিতে চাই। আমাদেরকে ভালো মানুষ, মূল্যেবোধ সম্পন্ন, সততা, নিষ্ঠাবান মানুষ গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য দরকার গুনগত মান সম্পন্ন শিক্ষক।
প্রধান বক্তা এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বলেন, রাউজান এখন পিংক, গ্রিন, ক্লিন উপজেলা। এটি বাংলাদেশের বুকে একটি ব্যতিক্রম উপজেলা। এখানে কোনদিন হরতাল পালন হয়না।
জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু এমপি বলেন, শিক্ষা মানুষকে সর্বোচ্চ শিকরে নিয়ে যায়। তবে প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে হবে। শিক্ষাকে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে। যাতে শতভাগ শিক্ষিত হয় দেশ।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী নাহিদ কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজের দুইতলা ভবনকে চারতলায় রূপান্তর, আরো একটি নতুন ভবন, ৬ তলা বিশিষ্ট একটি আইসিটি ভবন, অর্থ সচিব মুসলিম চৌধুরীর সম্মানে আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য আরো একটি চারতলা ভবন নির্মাণের আশ্বাস ছাড়াও আরো উন্নয়নের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করার আশ্বাস দেন। এছাড়া কদলপুর আইডিয়াল হাই স্কুলের জন্য ৬তলা ভবনের অর্থ বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে বলে উলেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে চার গুণীজনকে সংবর্ধণা প্রদান করা হয়েছে। তারা হলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মোহসিন চৌধুরী, কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজ সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, কদলপুর স্কুল এন্ড কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও বীমাবিদ এস এম ইউসুফ। অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত শিল্পীদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা অতিথি ও দর্শকদের মুগ্ধ করে। রাতে র্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রথমদিন ছিল প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র’র কুপন বিক্রি ও কিটস বিতরণের উদ্বোধন। এছাড়াও হালদা, কর্ণফুলী, মাতামহুরি, পদ্মা, যুমনা, শঙ্খসহ বিভিন্ন স্টলের উদ্বোধন করা হয়। এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে পুরো কদলপুরে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়।