পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনায় গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ পরিবেশ মন্ত্রীর

সার্কিট হাউসে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

চট্টগ্রাম : আগামী এক মাসের মধ্যে নগরীর মতিঝর্ণা পাহাড়ে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনায় গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। মন্ত্রী বলেন, পাহাড় কাটা সম্ভব, পাহাড় নির্মাণ করা সম্ভব নয়। পাহাড় সৌন্দর্য্যের প্রতীক। পাহাড়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য রক্ষা করতে হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হলে, পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ ও তাদের ব্যবহৃত গ্যাস, পানি ও বিদ্যুতের সংযোগ আগামী এক মাসের মধ্যে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।

আরাে পড়ুন : পরিবেশ মামলায় বন্ধ এশিয়ান পেপার মিল চালুর দাবিতে মানববন্ধন
আরো পড়ুন : বিভাজন ভুলে পার্বত্যাঞ্চলে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২০তম সভায় এ নির্দেশনা দেন মন্ত্রী। এসময় অবৈধ জায়গায় পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ কেন দেওয়া হয়েছে_প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় মন্ত্রী আরো বলেন, পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের অবশ্যই নিরাপদ স্থানে আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করতে দিবেন না। সিডিএ’র প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, নির্মাণাধীন ফৌজদারহাট থেকে বায়জিদ বোস্তামি পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ চারলেন সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পাহাড় কাটা হয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের নির্দেশ তারা আধৌ মান্য করেনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

ফৌজদারহাট-বায়জিদ বোস্তামির রাস্তার পাশে (সীতাকুন্ড-জঙ্গল সলিমপুর) পাহাড় কেটে লেক ভরাট করা হয়েছে। এ
বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, পরিবেশের সৌন্দর্য রক্ষা করে উন্নয়ন করতে হবে। দেশের স্বার্থেই পরিবেশের সুরক্ষা করা প্রয়োজন ।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এ বি এম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জিয়াউল হাসান, অতিরিক্ত সচিব মাহামুদুল হাসান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. রফিক আহমেদ।

বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. নুরুল আলম নিজামী, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. হাবিবুর রহমান, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইকবাল হোসেন, সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শ্যামল কুমার নাথ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. রেজাউল করিম, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন প্রমূখ। সভায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, কেজিডিসিএল ও গণপূর্তসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে মন্ত্রী লালখান বাজারের মতিঝর্ণা পাহাড়, সিডিএ’র নির্মাণাধীন বায়জিদ বোস্তামি-ফৌজদারহাট চারলন সংযোগ সকড়কের পাহাড় কর্তন, আরেফিন নগর পাহাড় কর্তন, কালুরঘাট শিল্প নগরী পরিদর্শন করেন।

সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। এত আইনগত বৈধতাও আরো বাড়বে। পাহাড় ব্যবস্থাপনা আরো শক্তিশালী করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের জনবল কাঠামো বর্ধিত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মো. মোয়াজ্জম হোসেন।

শেয়ার করুন