হত্যা মামলা ওসি শেখ আব্দুল্লাহসহ ৬ পুলিশের বিরুদ্ধে

ক্রসফায়ারে নিহত প্রবাসীর স্ত্রীর আহাজারি। ইনসেচে ভূজপুর থানার ওসি শেখ আব্দুল্লাহ।

এইচ.এম.সাইফুদ্দীন : ক্রসফায়ারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার দায়ে ফটিকছড়ির ভুজপুর থানার ওসি শেখ আবদুল্লাহসহ ৬ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন শারমিন আক্তার নামে এক প্রবাসির স্ত্রী। একই মামলায় একজন স্থানীয় ব্যক্তিকেও আসামী করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর দাবী ওই স্থানীয় ব্যক্তিই তার নির্দোষ স্বামীকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।

বুধবার (২৬ আগস্ট) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খোরশেদুল আলম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূজপুর থানা পুলিশের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হাটহাজারী সার্কেল এসপিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরো পড়ুন : ভাড়া বাড়ছে রেল ভ্রমণে
আরো পড়ুন : বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন বাঙালির মণিকোঠায় : রেজাউল করিম

মামলায় অন্য আসামিরা হলেন ভূজপুর থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন, এসআই রাশেদুল হাসান, এস আই ওবাইদুল্লাহ,এস আই প্রবীর দেব, এএসআই কল্পরঞ্জন চাকমা এবং স্থানীয় আব্দুল মান্নান।

মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মে রাত ২টায় ফটিকছড়ির ভূজপুরে দুই স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণ করে একদল দুর্বৃত্ত। এ মামলার প্রধান আসামি প্রবাসী হেলাল উদ্দিন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। নিহত হেলাল একই এলাকার জাফর আলমের ছেলে। প্রবাসে থাকলেও বেশ কিছুদিন আগে তিনি দেশে আসেন।

হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। স্থানীয় কসাই মান্নান আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে পুলিশে হাতে তুলে দেয়। পুলিশ আমার স্বামীকে রাতে মেরে ফেলেছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’

মামলার বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর সুব্রত ব্যানার্জি বলেন, ‘ভূজপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেটি শুনেছি। তবে এখনও আমার হাতে কোনো কাগজপত্র আসেনি। তবে এর আগে আদালত থেকে স্থানীয় থানায় কোনো ইউডি মামলা হয়েছে কিনা সেটি জানতে চেয়েছে আদালত। সেটির প্রতিবেদন হাটহাজারী সার্কেল থেকে জমা দেওয়া হয়েছে।’

বাদি পক্ষের আইনজীবী দেওয়ান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মামলাটি ফাইল করার সময় ছিলাম। আমরা মামলাটি তদন্তের জন্য র‌্যাবকে দেওয়ার আবেদন করেছি। তখন আদালত বলেছেন বিষয়টি প্রাথমিক তদন্ত শেষে র‌্যাবকে দেবো।’

এ বিষয়ে ভূজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবদুল্লাহ অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ‘চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে থানা পুলিশের একটি দল আঁধারমানিকের গলাচিপা এলাকায় গেলে প্রধান আসামি হেলাল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। তবে আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না।