তিনি ‘স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ’ চিকিৎসক বটে!

তিনি ‘স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ’ চিকিৎসক বটে!

চট্টগ্রাম : জেলার হাটহাজারী থানার আবদুর রহিমের ছেলে মুহাম্মদ খোরশেদ আলম (৪২)। ওয়ার্ড বয় পদে কাজ করতেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। ওই সময়ে রপ্ত করেছেন কিছু কৌশল। তার উপর ভর করে ওই চাকরি ছেড়ে নিজেই বনে গেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ‘স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ’। ৫শ টাকা ভিজিট নিয়ে নগরীর আকবরশাহ এলাকায় একটি ফার্মেসীতে নিয়মিত রোগী দেখতেন। নামের পাশে জুড়ে দিয়েছেন ‘নিউরোমেডিসিন, স্নায়ুরোগ ও ডায়াবেটিস’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। এমন প্রতারককে অবশেষে আটক করেছে থানা পুলিশ।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। নামের পাশে নিজেই যুক্ত করেছেন এমবিবিএস (ডিএমসি), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (মেডিসিন), এমডি (নিউরোলজি) ডিগ্রি ও ‘নিউরোমেডিসিন, স্নায়ুরোগ ও ডায়াবেটিস’ বিশেষজ্ঞ। এসবের পুরোটাই প্রতারণা।

পুলিশ জানায়, চিকিৎসক সেজে এতদিন নগরীর আকবর শাহ থানার কর্নেল জোন্স রোডের একটি ফার্মেসিতে ‘নিউরোমেডিসিন, স্নায়ুরোগ ও ডায়াবেটিস’ বিশেষজ্ঞ হিসেবে ৫০০ টাকা ভিজিট নিয়ে নিয়মিত রোগী দেখতেন।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) এই ভুয়া চিকিৎসককে আটকের পর এই তথ্য পায় পুলিশ। তিনি এর আগে দুইবার গ্রেফতার হয়েছিলেন কুমিল্লা ও মাগুরায়।সর্বশেষ গ্রেফতার হলেন চট্টগ্রামে। বর্তামানে তিনি নগরীর পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন।

আরো পড়ুন : হেফাজতের কোনো নেতাকর্মী সহিংসতায় ছিল না: বাবুনগরী
আরো পড়ুন : ট্রেনে আসবে কুরবানির পশু

বিষয়টি নিশ্চিত করে আকবর শাহ থানার ওসি মোহাম্মদ জহির হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার কর্নেল জোন্স রোডের হাজী ইব্রাহিম ম্যানশনের ‘কাট্টলি মেডিকেল হল’ থেকে খোরশেদ আলমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তার কাছে থেকে চিকিৎসা সরঞ্জামসহ নামফলক, ভিজিটিং কার্ড, সীলমোহর ও বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো ডিগ্রীধারী চিকিৎসক নন বলে স্বীকার করেছেন। মূলত তিনি অষ্টম শ্রেণি পাস করেছিলেন। এক সময় ঢামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ছিলেন। সেখানকার কিছু অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন জেলায় ফার্মেসিতে চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন তিনি।

ওসি জানান, ২০১৩ সালে কুমিল্লায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে গ্রেফতার হয়ে ছয় মাসের কারাদ­ণ্ড ভোগ করেছিলেন খোরশেদ আলম।একইভাবে ২০১৭ সালে মাগুরায় ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে গ্রেফতার হয়ে এক বছরের কারাদণ্ড­ ভোগ করেন তিনি।

এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও ছদ্মবেশ ধারণের অপরাধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

শেয়ার করুন