হাটহাজারী: মুঠোফোনে বোনের অভিযোগ পেয়ে বোনের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বোন জামাতাসহ তিনজনকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী পৌর এলাকার পশ্চিম দেওয়াননগর মিঁয়াজি পাড়া আলী হোসেন ড্রাইভারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, ঐ বাড়ির মরহুম আব্দর রাজ্জাকের পুত্র জামাতা জানে আলম(৩০), তার ভাগ্নি মর্জিনা (১৫) ও ভাবি আমেনা(২১)।
এ ঘটনায় জামাতা জানে আলম বাদী হয়ে নামীয় চারজন ও অজ্ঞাত পরিচয়নামা একজনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে।
বিবাদীরা হলেন, রাউজান থানাধীন চিকদাইর হাবিলাস তালুকদার বাড়ির মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র মোঃ মোরশেদ (৪০), মোঃ জামসেদ (৩০), স্ত্রী নুর আয়শা বেগম (৫৫), কন্যা ফাতেমা বেগম প্রকাশ বুলবুলি (২০)।
অভিযোগ ও আহতদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এক বছর আগে সিএনজি চালক জানে আলমের সাথে ফাতেমা বেগম বুলবুলির সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সাথে অসদাচরণ করে ফাতেমা। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে বিবাধে জড়ায়। শ্বাশুড়ি কিংবা দেবর ভাসুর কারো সাথেই বনিবনা হচ্ছিলো না। এক পর্যায়ে তার জন্য পরিবার থেকে আলাদা করে দেওয়া হয় জানে আলমকে। তারপরও ফাতেমা তার সাথে খারাপ আচরণ করে। তালাকের হুমকি দেয়। পিত্রালয়ে ভাইদের ফোন করে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন, ভরণ পোষণ দেয়না ইত্যাদি বলে মিথ্যে অভিযোগ দেয়। এসব শুনে পিত্রালয় থেকে জানে আলমের শাশুড়ি ও সমন্ধিরা এসে জানে আলমকে শাসিয়ে যায়। সংসার না করলে তালাকের পরামর্শও দেয়। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ফাতেমার ফোন পেয়ে ও অজ্ঞাত পরিচয় একজনসহ বিবাদীরা বোনের শ্বশুড়বাড়িতে এসে বিবাদে লিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে আয়েশা ও ফাতেমার উস্কানীতে মোরশেদ ও জামসেদ আমার বোনের সাথে দুর্ব্যবহার কেন এ বলেই ধারালো ছুরি দিয়ে দুই হাতের কনুই কব্জি ও দুই পায়ের হাঁটু, হাঁটুর উপর নিচে এলোপাতারী ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে জানে আলমকে। তার চিৎকারে ভাগ্নি মর্জিনা ও ভাবি আমেনা দৌড়ে এলে তাদেরও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে স্থানীয়দের ভয়ে তারা চলে গেলেও ফাতেমা স্বামীর ঘরেই অবস্থান নেয়।
স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে প্রতিবেদককে সত্যতা নিশ্চিত করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। জানে আলমের দুই হাত ও দুই পায়ে বেশ কয়েকটি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান।
এদিকে ঘটনার চারদিন পর ফাতেমার পরিবার ফাতেমা অসুস্থ (গর্ভবতী) তাকে আটকে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগে থানার এএসআই মজিবুলের সহযোগিতায় ফাতেমাকে পিত্রালয়ে নিয়ে যায়।
ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে জানে আলম বলেন, ঘটনার ৩/৪ দিন আগে সিএনজি নষ্ট হওয়ায় কিছুটা কষ্টে পড়েছিল। ঠিকমত বাজার করতে পারেনি। এ নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়ে ফাতেমা পিত্রালয়ে ফোন করে। তবে তার অগোচরে নিশ্চয়ই এমন কিছু বুঝিয়েছে যার দরুন তার শশুড় বাড়ির লোক তার উপর চরম ক্ষিপ্ত হয়ে এভাবে ছুরিকাঘাত করেছে তাকে। তিনি সন্দেহ পোষণ করছেন শশুড় বাড়ির লোকজন তাকে উল্টো ফাঁসানোর জন্য যৌতুক, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন মিথ্যে অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা মোকাদ্দমা রুজু করতে পারে। তাই স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেন, বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করে হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হোক।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোরশেদ ঘটনার দিন জানে আলমের বাড়িতে গিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে স্বীকার করলেও ছুরিকাঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে এসআই আমিরুল মুজাহিদ জানান, বিষয়টি তদন্ত চলছে।