শংকর চৌধুরী (খাগড়াছড়ি) : আমার পাহাড় আমার জীবন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সকল জাতি ধর্মের মানুষের স্বার্থ রক্ষায় নিবেদিত_ এই স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) এর ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।
আরো পড়ুন : চট্টগ্রামের শিল্পকলায় নোয়াকের আলোচনা সভা ও মানববন্ধন
এ উপলক্ষে রবিবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার থেকে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে খাগড়াছড়ি অফির্সাস ক্লাব মিলনায়তনে কেক কাটা ও আলোচনা সভায় মিলিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, তিন পার্বত্য জেলার ৩টি সংসদীয় আসন ও সংরক্ষিত নারী আসনের সরকার দলীয় ৪ এমপি উপজাতি, আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানও উপজাতি। পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন প্রতিষ্ঠানে বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নেই। শিক্ষা, চাকুরী ও ব্যবসা-বানিজ্যে সর্বত্র বৈষম্য চলছে। তারপরও কোন কোন মহল বলছে পাহাড়ে নাকি শান্তির সু-বাতাস বইছে।
পিসিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ লোকমান হোসেনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় সাবেক সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আলকাছ আল-মামুন ভূঁইয়া, প্রধান বক্তা হিসেবে পিএনসিপি কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক আলমগীর কবির, ছাত্র পরিষদের মনিটরিং বিষয়ক প্রধান শেখ আহম্মেদ রাজু, স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য এডভোকেট আলম খান, আনিছুজ্জামান ডালিম, এস এম মাসুম রানা, মহিলা পরিষদের নেত্রী সালমা আহম্মেদ মৌ, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহাদৎ সাকিব, সাধারন সম্পাদক আসাদুল্লাহ আসাদ ছাড়াও স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও মহিলা পারিষদের মনিটরিং কমিটির প্রধান অধ্যক্ষ আবু তাহের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
পাহাড়ে সন্ত্রাসের গডফাদার সন্তু লারমার সাথে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করে সন্তু লারমাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, তিনি সরকারের সাথে চুক্তি লংঘন করেছেন।
পাহাড়ে আঞ্চলিক সংগঠন গুলোর নামে চাঁদাবাজি, হত্যা ও গুমের সাথে জড়িত সন্ত্ররাসীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করাসহ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ধারাসমূহ বাতিলসহ পার্বত্য চুক্তির পুন:মূল্যায়ন।
ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের নামে পার্বত্য চগ্রগ্রাম থেকে বাঙালি উচ্ছেদের নীলনকশা বন্ধ। যৌথ অভিযানের মাধ্যমে পাহাড় থেকে সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার। পার্বত্যাঞ্চল থেকে প্রত্যাহারকৃত সকল সেনাক্যাম্প পুন:স্থাপন। বাঙালিদের গুচ্ছগ্রাম নামক বন্দিশালা থেকে
মুক্তি ও পুর্ন:বাসনের মাধ্যমে ভিটেমাটি ফেরত দেওয়ারও দাবি জানানো হয় সভা থেকে।
অন্যথায় পার্বত্যাঞ্চলে চাঁদাবাজি, হত্যা ও গুমসহ সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে এখানে বসবারত সকল মানুষকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অচল করে দেয়ার হুশিয়ারী দেয়া সভা থেকে।