সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে সম্প্রীতি সমাবেশ খাগড়াছড়িতে

সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়াও, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ো

শংকর চৌধুরী (খাগড়াছড়ি) : সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) রেজি নং-চট্ট-২৮০৮, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, পেশাজীবি সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সর্বস্তরের সচেতন নাগরিক সমাজ।

“সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়াও, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ো” প্রতিপাদ্যে বৃহস্পতিবার শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় ১ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেয়া সংগঠন গুলোর ব্যানারে ব্যানারে শ্লোগান ছিল, “চাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ”। “রাজনৈতিক দোষারোপ নয়, সহিংসতা রোধে অভিলম্বে সমস্ত ঘটনার সুস্থ বিচার হোক”, “বিশ্বভরা প্রাণের ডাক, সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নিপাত যাক”। “সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান রোধ করি, সাম্প্রদায়িক হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ি”।

আরো পড়ুন : ইউনিয়ন আ’লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সভাপতি জিতেন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু দাউদ’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে, জেলার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য, স্থানীয় দৈনিক অরণ্যবার্তা সম্পাদক চৌধুরী আতাউর রহমান রানা, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নুরুল আজম, বর্তমান সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, সনাতন সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি এডভোকেট বিধান কানুনগো, জেলা দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সুর্দশন দত্ত, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন, জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক এবং লেখক ও গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, নারী উদ্যোক্তা ও সমাজ কর্মী শাপলা দেবী ত্রিপুরা, সাংবাদিক ও নারী অধিকার কর্মী চিংমেপ্রু মারমা, সনাক প্রতিনিধি লালসা চাকমা এবং আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের প্রতিনিধি সুপ্তা চাকমাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশে শান্তি, সম্প্রীতি নষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল উঠেপড়ে লেগেছে, তাদেরকে অচিরেই একযোগে ও ঐক্যতার সাথে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ্য করে সমাবেশে বক্তারা বলেন, আমরা এই দেশে শান্তিতে থাকতে চাই, বাংলাদেশ আমাদের জন্মভূমি, এই দেশের সকল সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীদের নিরাপত্তা দেওয়া একটি আদর্শ রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এদেশের সকল সম্প্রদায়, সকল ধর্মের জান, মালের সুরক্ষা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থ মঠ, মন্দির, মন্ডপ, উপসনালয় রাষ্ট্রের অর্থায়নে ও ব্যবস্থাপনায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে হবে।

বক্তাতারা আরো বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতায় ধর্মীয় পুরোহিত ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের হত্যার বিচার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পুনর্বাসনে সরকারের উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরি করে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে পুনর্বাসনসহ ভবিষৎ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ভবিষ্যতে যেকোন ধরণের সহিংসতায় আমরা আর প্রতিবাদ নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্যতা গড়ে প্রতিরোধ করবো। আর নয় প্রতিবাদ। এবার আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবো, অসাম্প্রদায়িক ঐক্যতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।

সম্মিলিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) রেজি নং-চট্ট-২৮০৮, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, পেশাজীবি সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, বরক ব্লাড ব্যাংক (অনলাইন রক্তদাতা সংগঠন), বিশ্বভরা প্রাণ (শিল্পমৈত্রী সংগঠন), নারী অধিকার উপ-কমিটি, বাংলাদেশ আবৃত্তি পরিষদ, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), খাগড়াপুর মহিলা কল্যাণ সমিতি ও জেলার সর্বস্তরের সচেতন নাগরিক সমাজ এতে অংশ নেন।