চট্টগ্রাম : কুয়েত প্রবাসী বন্ধন নাথ নামের এক ভুক্তভোগীর দায়ের করা কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত_এমন দুজনকে গ্রেফতার করেছে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে নগরীর সাগরিকা থেকে দেবাশীষ নাথ দেবুকে (৪৮) গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে মুরাদপুর থেকে এটিএম মনজুরুল ইসলাম রতন নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি মহি উদ্দিন মাহমুদ।
দেবাশীষ নাথ দেবু নগরীর পাঁচলাইশ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে পদ না থাকলেও প্রয়াত নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নগরীতে স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক।
মনজুরুল স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিজেকে পরিচয় দেন বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে সাংগঠনিক কোন পদে তার নাম নেই।
ওসি জানান, নগরীর পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাছিরাবাদ এলাকায় ২০০৭ সালে একটি পুরনো ভবন কেনার পর সেটি ভেঙে নতুন ভবন তৈরির চেষ্টা করছিলেন বন্ধন নাথ। ২০১৬ সালে ডিজাইন সোর্স টিম লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানকে ভবন তৈরির দায়িত্ব দেন তিনি।
২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর পর দেবুর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এসে ভবন তৈরি করতে হলে তাদের এক কোটি টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বন্ধনকে মারধর এবং পিঠের ডান পাশে গুলি করে গুরুতর জখম করে বলে মামলার আরজিতে দাবি করা হয়েছে।
পরে বন্ধন কুয়েত গিয়ে প্রাইম ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে দেবুসহ সন্ত্রাসীদের ৭০ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হন।
এর মধ্যে ২০১৭ সালে ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান সেখানে ভবন নির্মাণে অস্বীকৃতি জানান। পরে বন্ধন নাথ তার শুভাকাঙ্খী পাঁচজনের সঙ্গে মিলে সেখানে ভবন তৈরির কাজে হাত দেন।
চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরুর পর আবারও সন্ত্রাসীরা এসে আরও ৩০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য দেবাশীষ নাথ দেবু ও মনজুরুল ইসলাম রতন। তারা বন্ধন নাথের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন।
এই অবস্থায় ২৩ ফেব্রুয়ারি বন্ধন নাথ পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়েরের পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে।
ওসি মহি উদ্দিন মাহমুদ বলেন, মামলা দায়েরের পর আমরা অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছি। দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আশা করছি বাকিদেরও গ্রেফতার করতে পারব।
এদিকে শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দেবু ও রতনকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।