নজরদারিতে বাবুল আক্তার যেকোন সময় গ্রেফতার 

সাবেক এসপি বাবুল আক্তার। ফাইল ছবি

ঢাকা : সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা রহস্যজট খুলতে শুরু করেছে। পুলিশের আরেক এসআই আকরামের রহস্যজনক মৃত্যুর সাথে বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে-এমন অভিযোগ সামনে আসার পর আলোচিত মিতু হত্যা রহস্যেরও ডালপালা বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

ধারণা করা হচ্ছে এসআই আকরামের মৃত্যুর সাথে মিতু হত্যার একটি নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। ধারণা সত্যি হলে যেকোন সময় গ্রেফতার হতে পারেন পুলিশের সাবেক ওই চৌকশ কর্মকর্তা বাবুল আকাতার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে অবশ্যই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’ এসআই আকরামের মৃত্যুর পর তার পরিবার হত্যার অভিযোগ করলেও কেন বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাবুলের বিরুদ্ধে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে অবশ্যই আইন মোতাবেক কাজ করবে প্রশাসন। আইন সবার জন্যই সমান। অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোও এমন আভাস দিয়েছে। তারা বলছে, বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করার বিষয়ে শিগগির একটা সিদ্ধান্ত আসতে পারে। একটি ক্লুর পেছনে ছুটছে পুলিশ। সেটি পাওয়ামাত্র তাকে গ্রেফতার করা হবে। বলতে পারেন, তারা ক্লুর কাছাকাছি পৌঁছে গেছেন।

চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলাটির তদন্ত করছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্ত চলছে। ২৪ ফেব্রুয়ারির পর আমি চট্টগ্রামের বাইরে অভিযানে যাব। তখন হয়তো নতুন বা বড় কোনো খবর দিতে পারব।’

জানা গেছে, বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ শাখার এসআই আকরাম হোসেনকে হত্যার অভিযোগটিও আমলে নিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ বিষয়ে নিহত আকরামের পরিবারের অভিযোগ আমলে নিয়ে গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, হতে পারে এর মধ্যেই বহুল আলোচিত মিতু হত্যাকাণ্ডের ক্লু লুকিয়ে থাকতে পারে।

এ প্রসঙ্গে এডিসি কামরুজ্জামান বলেন, মামলা তদন্তে সব ধরনের তথ্যকেই গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে যেসব অভিযোগ আসছে তা আমলে নিয়ে তদন্ত করা হবে। কারণ কোথাও না কোথাও ঘটনার ক্লু লুকিয়ে আছে। সেটা হয়তো আমাদেরও জানা নেই।

মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, বাবুল আক্তারের পরকীয়ার কারণে মিতু খুন হয়েছেন এমন অভিযোগ ওঠার পর চাঞ্চল্যকর এ হত্যার নেপথ্যে কোনো ক্লু আছে কিনা সেটা বের করার চেষ্টা করছে তদন্ত সংস্থা। মিতু ও আকরাম হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা কিনা- সেসব বিষয়ও তদন্ত অব্যাহত আছে।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একাধিক কর্মকর্তা জানান, বাবুল আক্তারকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিগন্যাল পেলেই বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার করা হবে।

প্রসঙ্গত, এসআই আকরামের মৃত্যুর ঘটনায় তার পাঁচ বোন শুক্রবার তাদের নিজ জেলা ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলন করে বাবুল আক্তারকে দায়ী করে বিচার দাবি করেন।

গত বছরের ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। হত্যাকাণ্ডের পর তথ্যানুসন্ধানের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে পুলিশ সদর দফতর। ওই কমিটি পুলিশ সদর দফতরে প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর হঠাৎ করেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি।

শেয়ার করুন