আগের মন্ত্রিসভার ৩৪ হ্যাভিওয়েট নেতাই বাদ

নতুনদের নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবলায় শঙ্কল্প নিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারের প্রধানমন্ত্রীসহ ৪৭ মন্ত্রিসভার সদস্যের মধ্যে ৩১ জনই নতুন। বাদ পড়লেন আগের মন্ত্রিসভার ৩৪ প্রবীণ সদস্য। আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, আবদুল মাল আবুল মুহিত তোফায়েল আহমেদ কিংবা মোহাম্মদ নাসিমের মতো প্রবীণ নেতারা যেমন বাদ পরেছেন। তেমনি নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি জোট শরীক নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর মতো হ্যাভিওয়েট নেতারাও।

রোববার (৬ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

আরো পড়ুন : বীর বাহার, হাসান মাহমুদ ও সাইফুজ্জামান চৌধুরী পূর্ণমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী বাদে ৪৬ জনের মন্ত্রিসভায় ৩১ জনই নতুন মুখ। বাদ পড়ছেন আগের মন্ত্রিসভার ৩৪ জন। এছাড়া পাঁচজন প্রতিমন্ত্রি থেকে পদোন্নতি পেয়ে হলেন পূর্ণমন্ত্রী এবং তিনজন একই দায়িত্বে থাকছেন।

এছাড়াও নুরুল ইসলাম নাহিদ, কামরুল ইসলাম, খোন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, আসাদুজ্জামান নূরসহ প্রায় সব বড় বড় নেতাই বাদ পড়লেন।

পুরনো মন্ত্রীদের মধ্যে থাকছেন কেবল আ হ ম মুস্তফা কামাল, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, আ ক ম মোজাম্মেল হক ও আনিসুল হক। পরিকল্পনা থেকে পদোন্নতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন মুস্তফা কামাল। বাকি চারজন তাদের আগের দপ্তরেই থাকছেন।

ভোটের আগে পদত্যাগ করা টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান তার পুরনো দপ্তর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এবং মোস্তাফা জব্বারও তার পুরনো দপ্তর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিতে ফিরছেন।

এক মেয়াদ বিরতির পর মন্ত্রিসভায় ফিরছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি। রাজ্জাক পাচ্ছেন কৃষি এবং দীপু মনি পাচ্ছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নতুন সরকারে জোট শরিক দলের নেতা রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পাশাপাশি ডাক পাননি ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমও। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত আগেই অবসর নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচনেও অংশ নেননি। নতুন মন্ত্রিসভায় তার নামও নেই।

আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়েছেন দলে শক্তিশালী নেতা হিসেবে পরিচিত শাজাহান খান ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। শাজাহান খান নৌমন্ত্রী ও মায়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলে আসছিলেন।

দুই মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর এবার বাদ পড়েছেন শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনের শ্বশুর খোন্দকার মোশাররফ হোসেন। বাদ পড়েছেন আসাদুজ্জামান নূরও।

এছাড়াও এবার বাদ পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ভূমিমন্ত্রী শামসুজ্জামান শরীফ ডিলু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দ্র, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।

বিদায়ী সরকারের সাত প্রতিমন্ত্রী বাদ পড়েছেন। তারা হলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। জাতীয় পার্টির শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গাঁও বাদ পরেন।

শেয়ার করুন