ডিসির পত্র জালিয়াতি : অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা নাইক্ষ্যংছড়িতে

অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইনে

নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) : নাইক্ষ্যছড়ি মদিনাতুল উলুম মাদরাসার বিভিন্ন ডকুমেন্ট পত্র জালিয়তি ঘটনার মূল হোতা অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইনের বিরুদ্ধে অবশেষে মামলা দায়ের করেছে প্রশাসন।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সৈয়দ হোছাইন (৪২)কে বিবাদী করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় (৭-২৪/১২/১৯ইং) মামলা দায়ের করেন। বিবাদী উপজেলার মদিনাতুল উলুম মডেল ইনিস্টিটিউট আলীম মাদরাসার বর্তমান অধ্যক্ষ।

আরো পড়ুন : এখনকার রাজনীতিবিদদের কথাবার্তা রিকশাচালকের মতো : কাদের
আরো পড়ুন : চট্টগ্রামে ২০০ বোতল বিদেশি মদসহ ১জন গ্রেফতার

অনুসন্ধানে জানাযায়, সরেজমিন ও গোপন তদন্তে পত্র জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ার পর অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন কচি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

আরও জানাযায়, নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট আলীম মাদরাসার নির্বাহী কমিটির ২জন শিক্ষানুরাগী সদস্য মনোনয়নের জন্য জেলা প্রশাসকের একটি পত্র জালিয়াতির আশ্রয় নেয় অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইন। ২০১৮ সনের ১৩ নভেম্বর ০৫.৪২.০৩০০.২০৯.০২.০০৯.১৮-৩৩৬ স্মারক মূলে নির্বাহী কমিটির জন্য মোহাম্মদ শফি উল্লাহ ও ছৈয়দ আলমকে নির্বাহী কমিটির সদস্য করে মাদরাসা বোর্ড থেকে অনুমোদন গ্রহণ করান ওই অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইন। প্রকৃতপক্ষে অনুমোদন নেওয়া সেই পত্রটি বান্দরবান জেলা প্রশাসক ইস্যু করেননি। জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত উপজেলার আশারতলী এলাকার অন্য একটি মাদ্রাসার স্মারক নাম্বার জালিয়তি করে মাদরাসা অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইন নিজেই পছন্দের ব্যক্তির নাম বসিয়ে পত্রটি জালিয়তি করেন।

এদিকে, মাদরাসার শিক্ষক, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিক সমাজ অধ্যক্ষ সৈয়দ হোছাইনের নানা অনিয়ম, নারীলোভী ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে এই প্রতিবেদকে জানান, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ এবং মানববন্ধন করে অভিযুক্ত অধ্যক্ষের অপসারণ দাবী করে আসছিলেন এলাকাবাসী।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের তদন্তে আনীত অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ার পর ঘটনার পাঁচ মাসের মাথায় জালিয়াতির অভিযোগে প্রশাসানের পক্ষ থেকে মামলাটি করা হলো।

স্থানীয় রাজনীতিবিদরা জানান, আশি নব্বয় দশকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির মাধ্যমে জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় হন অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোছাইন । তিনি বর্তমান জামায়াতের সাথে গোপনে আতাঁত রয়েছে বলে একটি সূত্রে জানাযায়।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, মদিনাতুল উলুম মাদরাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে একাধিক লিখিত অভিযোগ করে আসছিল এলাকাবাসী। অনেক অভিযোগ প্রমাণও হয়েছে। তারমধ্যে পত্র জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসকের পক্ষে মামলাটি করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মর্কর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন জেলা প্রশাসকের পত্র জালিয়াতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাদী হওয়া মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে। মামলা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।